চোর সন্দেহে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছের সাথে উল্টো করে ঝুলিয়ে পিটানোর অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০১:৫১:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"source_tags":[],"total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

গাছের সঙ্গে উল্টো অবস্থায় আবুল কালাম আজাদ ছবি:সময়ের সন্ধানে
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বানুটারী ( গেন্দির বাজার) গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নেশা কেনার টাকা কে কেন্দ্র করে, থেকে ডেকে এনে চোর সাজিয়ে এ ধরনের অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ বিষয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বানুর টারি গ্রামের রমজানের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৩০) এর সাথে একই গ্রামের সোলেমান আলীর ছেলে রমজান আলী ও আলামিনের মাদক কেনার টাকাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আবুল কালামকে বাড়ি থেকে ডেকে রমজান আলী বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বেধরক মারপিট করে পাঁচ লক্ষ টাকার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় রাত দুটোর দিকে আবুল কালাম আজাদকে রমজান আলীর বাড়ির পার্শ্ববতী ইউক্লিপটাস গাছে উল্টোদিকে ঝুলিয়ে বেথরক মারপিট করা হয়। এ সময় ঘটনার দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনায় জড়িতরা ঘটনা বেগতিক দেখে পরদিন শুক্রবার সকালে আবুল কালাম আজাদকে বসতবাড়িতে চুরির অভিযোগ এনে ডিমলা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ আহত আবুল কালাম আজাদ কে ডিমলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অন্য একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা খাকায় নীলফামারী জেল হাজতে প্রেরণ করে। এলাকাবাসীর শতাধিক লোকজন জানান, আবুল কালাম আজাদ চোর নয়, তাকে সাজানো হয়েছে। প্রতিপক্ষরা ঘটনা ঢাকতে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে আবুল কালাম আজাদকে বাধা অবস্থায় পেয়ে আমার গ্রাম্য পুলিশ দিয়ে বাধন খুলে দেই। এবং ডিমলা থানার ওসি সাহেবকে তৎক্ষণিক মোবাইল করে ঘটনা বিষয় জানিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বললে তিনি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলেন। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার পরিবেশ না থাকার কথা জানালে তিনি থানায় নিয়ে আসতে বলেন। আমি বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় কে ফোন দিয়ে সাহায্য চাই। পরে ইউএনও মহোদয়ের হস্তক্ষেপে ডিমলা থানা পুলিশ এসে আবুল কালাম আজাদ কে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি আরোও বলেন, কাউকে পেঠানো বা গাছে উল্টো ঝুলিয়ে পেটানোর অধিকার কারো নেই। ঘটনার পরদিন আবুল কালাম আজাদকে গাছে উল্টো দিকে ঝুলিয়ে পেঠানোর দৃশ্যটি ফেসবুকে দেখে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি। ঘটনাটি দুঃখজন এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। জযড়িতদের আইনের আওতায় এনে প্রচলিত আইনে বিচার করা হোক। যাতে এরকম ঘটনার পুরনাবৃত্তি না হয়। এ ব্যাপারে আবুল কালাম এর পিতা রমজান আলী বাদী হয়ে ডিমলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান জানান, গত শুক্রবার সকালে পশ্চিম ছাতানই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মোবাইল ফোনে ঘটনা জানিয়ে আইনগত সাহায্য চাইলে আমি ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলি।
এ ব্যাপারে ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফজলে এলাহী জানান, ইউএনও স্যারের মোবাইল পেয়ে অফিসার পাঠিয়ে আবুল কালাম আজাদকে ঘটনাস্থান থেকে উদ্ধার করে ডিমলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর অন্য একটি মামলায় নীলফামারি জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আবুল কালাম আজাদের পিতা রমজান আলী বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের তদন্ত চলছে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।