শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ-৫ পেয়ে দেশ সেরা প্রতিষ্ঠান নাছিমা কাদির মোল্লা স্কুল

- আপডেট সময় : ১০:৩৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

ছবি:সংগৃহীত
দেশের নামী-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে টপকে দেশসেরা নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা স্কুল এসএসসির ফলাফলে ধারাবাহিকভাবে দেশসেরা ফলাফল করেছে নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস। এ বছর ৩২০ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ৩২০ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টায় অনলাইনে এসএসসির ফলাফল ঘোষনার পর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন। প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লা ও মিসেস নাছিমা মোল্লা।
এরআগে ২০২২, ২০১৭ ও ২০১৫ সালে শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ-৫ পেয়ে দেশ সেরা ফলাফল অর্জন করেছিলো এই প্রতিষ্ঠানটি। বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে টানা শতভাগ পাসসহ ফলাফলের ভিত্তিতে প্রায় প্রতিবছরই বোর্ডে দেশ সেরার স্থান দখল করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩১৭ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা ৩ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ৩২০ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
এর আগে গতবছর ২৯৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৯৩ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলো। ২০২৩ সালে ২৭৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৭০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলো। ২০২২ সালে ২৬৬ শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৬৬ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছিলো। এছাড়া ২০২১ সালে ২৪৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলো। ২০২০ সালে ২১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২০০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলো। ২০১৯ সালে ১৭১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৬৮ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলো। ২০১৮ সালে ১৩৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিলো এবং ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৬৪ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছিলো।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া তানভীর আহমেদ সামী জানায়, করোনার জন্য আমাদেরকে সবাই অটোপাস বলে অপবাদ দিতো। এছাড়া গতবছর ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের কারণে পড়ালেখার অনেক ব্যাঘাত ঘটেছিলো। এসব কিছুর মধ্যে শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রমে আজকে আমাদের দেশসেরা ফলাফলে সেই অপবাদ মুছে যাবে।
বিজ্ঞান বিভাগের জিপিএ ৫ পাওয়া আরেক শিক্ষার্থী নাফিসা তাননিম অধীরা বলেন, এই ফলাফলের জন্য আমাদের বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনায় শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সঠিক দিক-নির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, গাইড টিচারের মাধ্যমে নিয়মিত হোম ভিজিট, টিউটোরিয়াল ও মাসিক পরিক্ষার কারণেই এই ভাল ফলাফল সম্ভব হয়েছে।
নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই ভাল ফলাফল করছে। এবার শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ ৫ পেয়ে দেশ সেরা ফলাফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। সারাদেশের সার্বিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে আশা করছি আমরা দেশসেরা অবস্থানে থাকব। মূলত নরসিংদীর মতো মফস্বল শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়েই আমি ও আমার সহধর্মিনী নাসিমা বেগম স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমি সবসময় চেয়েছি সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানবসম্পদে পরিনত হোক। যাতে আমাদের সমাজে সার্টিফিকেটধারি শিক্ষিত বেকার তৈরী না হয়।
তিনি আরও বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারটি স্তম্ভ। পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। আমাদের ভালো ফলাফলের মূল কারণ- আমরা একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হই না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন বলেন, একটি বিদ্যালয়ের ভালো ফলাফলের মূলমন্ত্র হচ্ছে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের মধ্যে সমন্বয়। আর আমাদের মূলমন্ত্র হচ্ছে আবদুল কাদির মোল্লা। স্যারের ইনোভেটিভ চিন্তা-চেতনা, সময়োপযোগী সঠিক দিকনির্দেশনায় আমাদের এই ফলাফল অব্যাহত আছে। এছাড়া আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এতো কঠোর পরিশ্রম করেন যেখানে ভালো ফলাফল করতে বাধ্য। আমরা শুধু অ্যাকাডেমিক ফলাফলে নয়, কো-অ্যাক্টিভিটি কারিকুলামেও দেশসেরা হয়ে আসছি।
উল্লেখ্য, নরসিংদীতে মানসম্মত শিক্ষা দানের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৮ সালে শহরের ভেলানগর এলাকায় থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা নরসিংদীতে তার এবং তার স্ত্রী মিসেস নাসিমা বেগমের নামে যৌথভাবে নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ১৬৪ জন তরুণ ও মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষিকার সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্কুলটি কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার।