গত দেড় বছরে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে: জাতিসংঘ

- আপডেট সময় : ১০:৪৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি:সংগৃহীত
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে গত দেড় বছরে আরও অন্তত ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে ইউএনএইচসিআর জানায়, রাখাইনসহ মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সংঘাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম দমন-পীড়নের মুখে ইতিমধ্যেই সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে।
ইউএনএইচসিআর জানায়, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে উদারতা দেখিয়ে আসছে। বর্তমানে কক্সবাজারের মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যার মধ্যে দেড় লাখ গত দেড় বছরে যোগ হয়েছে। ফলে অঞ্চলটি এখন বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে।
সংস্থাটির তথ্যমতে, নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করা শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, যারা বর্তমানে জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
রিপোর্টে বলা হয়, এসব শরণার্থী পুরোপুরি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। নতুন আগমনকারীদের কারণে খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আশ্রয়সহ মৌলিক পরিষেবায় চরম চাপ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যারা এখনো নিবন্ধনের আওতায় আসেনি, তাদের কাছে এসব সহায়তা পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইউএনএইচসিআর আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, বৈশ্বিক সহায়তা তহবিলে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দ্রুত তহবিল না বাড়ানো হলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং প্রয়োজনীয় রান্নার জ্বালানি (এলপিজি) ফুরিয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে।
এছাড়া প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশুর শিক্ষাসুবিধা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আর এদের মধ্যে প্রায় ৬৩ হাজার নতুন করে বাংলাদেশে আসা শিশু। প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে, যার মধ্যে ৬৩ হাজার শিশু নতুন করে আগত রোহিঙ্গা
এ অবস্থায় ইউএনএইচসিআর ও অন্যান্য মানবিক সংস্থা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশসহ আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং টেকসই সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত এবং স্বেচ্ছায় ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।