মা-ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা

- আপডেট সময় : ০৬:৪২:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫ ৫০ বার পড়া হয়েছে

ছবি:সংগৃহীত
কবিতা নিজের ছোট ছেলে রামদেবকে মেয়েদের জামা ও মাথায় ওড়না পরিয়ে দেন। দুই চোখে কাজলও দেন। নিজের গয়না দিয়ে ছেলেকে সাজিয়ে নেন। এরপর কবিতা নিজে, তাঁর স্বামী এবং রামদেব ও আরেক ছেলেসহ জলাধারে ঝাঁপ দেন। পরে তাঁদের চারজনকেই মৃত উদ্ধার করা হয়। ভারতের রাজস্থানের বারমারে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে ওই জলাধার থেকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশু সন্তানদের নিয়ে কেন এ দম্পতি আত্মহত্যা করলেন, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত চারজন হলেন শিবলাল মেঘওয়াল (৩৫), তাঁর স্ত্রী কবিতা (৩২), এবং তাঁদের দুই ছেলে বজরং (৯) ও রামদেব (৮)। জলাধারটি তাঁদের বাড়ি থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে অবস্থিত।
পুলিশ জানায়, ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। খবর পেয়ে দম্পতির শ্বশুরবাড়ির সদস্যসহ অন্য আত্মীয়-স্বজন রাতেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা পরদিন সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে বুধবার ভোরে তাঁদের উপস্থিতিতে জলাধার থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) মানোরম গর্গ জানিয়েছেন, কয়েকবার ফোন করেও শিবলালের ছোট ভাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এরপর শিবলালের পরিবারের খোঁজ নিতে এক প্রতিবেশীকে বাড়িতে পাঠান তিনি। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে সাড়া না পেয়ে ওই প্রতিবেশী স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে একটি হাতে লেখা চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটটি শিবলালের লেখা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২৯ জুন তারিখের ওই চিঠিতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে তাঁদেরকে আত্মহত্যার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের একজন শিবলালের ছোট ভাই। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবারের মধ্যে যৌথ মালিকানার জমি ও বসতবাড়ি নিয়ে বছরের পর বছর বিরোধ চলে আসছিল। চিরকুটে অনুরোধ করা হয়েছে, পরিবারের চার সদস্যের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যেন বাড়ির সামনেই সম্পন্ন করা হয়।
কবিতার চাচা জানিয়েছেন, শিবলাল প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় সরকারি সহায়তায় একটি আলাদা ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চিরকুটে অভিযোগ করা হয়েছে, এতে তাঁর মা ও ছোট ভাই আপত্তি জানান এবং বাধা দেন। চিরকুটে অভিযুক্ত হিসেবে তাদের দুজনেরই নাম রয়েছে।
কবিতার চাচা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘শিবলাল প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় পাওয়া অর্থ দিয়ে একটি আলাদা ঘর বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মা ও ভাই তাতে বাধা দেন। দীর্ঘদিনের এই হয়রানি তাঁকে ২৯ জুন আত্মহত্যার চিরকুট লিখতে বাধ্য করে।’
কবিতার চাচা আরও জানান, ঘটনার দিন বাড়িতে পরিবারের বাকি সদস্যরা ছিলেন না। শিবলালের মা তাঁর ভাইকে দেখতে বারমারে আর বাবা গিয়েছিলেন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে শিবলাল ও কবিতা দৃশ্যত মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন এবং আত্মহত্যা করেন।