ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে নিট পোশাক রপ্তানিতে প্রথমবারের মত চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দাম ও পরিমাণ, উভয় ক্ষেত্রেই এখন ইইউতে শীর্ষ নিট পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিজিএমইএ)।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে গেছে ৯ বিলিয়ন ডলারের নিট পোশাক, অপরদিকে চীন থেকে রপ্তানি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলারের নিট পোশাক। আর এভাবেই বছরের ৯ মাস বিবেচনায় এই প্রথমবারের মতো ইইউতে বাংলাদেশের নিট পোশাক রপ্তানি চীনকে ছাড়িয়ে গেল। একই সঙ্গে পরিমাণের দিক থেকেও শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ৯ মাসে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ৫৭ কোটি ১০ লাখ কেজি নিট পোশাক আমদানি করেছে। একই সময়ে চীন থেকে তাদের আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি ২০ লাখ কেজি।
প্রায় এক দশক ধরেই ইইউর বাজারে ডেনিম পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২০ সাল মেক্সিকোকে পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষস্থানটি বাংলাদেশ দখল করে নেয়।
চলতি বছরে আরেকটি অর্জনের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশে পোশাক খাতে। বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুতির পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে প্রথম শীর্ষে পৌঁছেছিল বাংলাদেশ।
তবে জুলাই থেকে ভিয়েতনাম আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুতির পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়।
বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির চিত্র শক্তিশালী হচ্ছে। চলতি ২০২৩ সালে নিট পোশাক একটা উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছাল।
বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সোমবার এক চিঠির মাধ্যমে সংগঠনটির সদস্য ও সাংবাদিকদের এ সকল তথ্য জানান।
চিঠিতে তিনি বলেন, গত বছর ইইউতে পরিমাণের দিক থেকে বাংলাদেশ নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত বছর ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩৩ কোটি কেজি। একই সময়ে ইইউতে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি কেজি। ওই বছর ইইউতে বাংলাদেশ ৭৩০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল, যা ছিল চীনের চেয়ে কম। কিন্তু এ বছরের প্রথম ৯ মাসে প্রথমবারের মতো নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে টপকে গেছে বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের বিষয়।
বিজিএমইএ সভাপতি তাঁর চিঠিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোয় আরও কিছু তৈরি পোশাকপণ্যে নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে।