এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ওএমআর শিট পূরণ, ২ শিক্ষক আটক

- আপডেট সময় : ০৬:৪৯:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫ ৪৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি:সংগৃহীত
এইচএসসি পরীক্ষার সময় অফিসকক্ষে বসে শিক্ষার্থীদের ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন) শিট পূরণ করে দেওয়ার অভিযোগে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থেকে দুই শিক্ষককে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা তারাকান্দা ফজলুল হক চৌধুরী মহিলা কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
আটককৃত শিক্ষকরা হলেন ওই কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক মো. জয়নাল আবেদিন এবং গণিতের প্রভাষক মো. হাবিবুর রহমান। জয়নাল আবেদিন পরীক্ষাকেন্দ্রের হল সুপারের দায়িত্বে ছিলেন এবং হাবিবুর রহমান পরীক্ষা কমিটির সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুলাই পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চলাকালে এই দুই শিক্ষক অফিসকক্ষে বসে শিক্ষার্থীদের ওএমআর শিট পূরণ করে দিয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসাইন আকস্মিকভাবে ওই কেন্দ্রে উপস্থিত হন। পরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে অভিযুক্ত শিক্ষকদের শনাক্ত করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করেন।
ঘটনাস্থল থেকেই তারাকান্দা ইউএনও জাকির হোসাইন অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ করেন। তিনি জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এবং অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদেরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হবে।
ফজলুল হক চৌধুরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. হোসেন আলী চৌধুরী বলেন, অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছি। তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইউএনও কে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান জানিয়েছেন, আটককৃত দুই শিক্ষককে ওএমআর শিট পূরণের অভিযোগে পাবলিক পরীক্ষাগুলো (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এর ৮ ধারা অনুযায়ী মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার বাদী অধ্যক্ষ নিজেই। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর সৈয়দ আক্তারুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কমিটির নেতৃত্বে আছেন ডেপুটি কন্ট্রোলার কৃষিবিদ ড. কামাল হাসান।
তদন্ত কমিটির সদস্য আবু সায়েম মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক অপরাধ শিকার করেছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্রটি বাতিল হতে পারে।