এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় এক মাদরাসায় একজনই পরীক্ষার্থী, তাও ফেল

নওগাঁ প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৯:২৬:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫ ২৬ বার পড়া হয়েছে
সময়ের সন্ধানে মিডিয়া লিঃ সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি:সংগৃহীত

এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সারাদেশে যখন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস, তখন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার একটি মাদরাসায় নেমে এসেছে হতাশা। উপজেলার ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদরাসা থেকে এ বছর কেউই পাস করতে পারেনি।

আত্রাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আত্রাই উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২,১৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ১,৪৯৪ জন পাস করলেও ফেল করেছে ৬৭২ জন শিক্ষার্থী। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো—ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সব শিক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছে।

মাদরাসার সুপার গোলাম মোস্তফা জানান, “মাদরাসা থেকে মাত্র চারজন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছিল। এর মধ্যে একজন ছাত্রী বিয়ের কারণে এবং একজন ছাত্র বিদেশে চলে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বাকি দুজনের মধ্যে এক শিক্ষার্থী পরীক্ষার মাঝপথে সড়ক দুর্ঘটনায় হাত ভেঙে ফেলায় আর অংশ নিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত একজন পরীক্ষার্থী পূর্ণাঙ্গভাবে পরীক্ষা দিলেও সে পাস করতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন, “মাদরাসাটি প্রায় ২৫ বছর ধরে এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে অধিকাংশ শিক্ষক বিনা বেতনে কিংবা স্বল্প অনুপ্রেরণায় ক্লাস নেন। পাঠদানে অনীহা এবং কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশোনার সুযোগ পায় না। এতে করে এমন করুণ ফল হয়েছে।”

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ধামইরহাট উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সবাই ফেল করায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন এমপিওভুক্ত না থাকা, শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে এ মাদরাসাটির শিক্ষার মান ন্যুনতম পর্যায়েও পৌঁছাতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় এক মাদরাসায় একজনই পরীক্ষার্থী, তাও ফেল

আপডেট সময় : ০৯:২৬:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

ছবি:সংগৃহীত

এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সারাদেশে যখন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস, তখন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার একটি মাদরাসায় নেমে এসেছে হতাশা। উপজেলার ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদরাসা থেকে এ বছর কেউই পাস করতে পারেনি।

আত্রাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আত্রাই উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২,১৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ১,৪৯৪ জন পাস করলেও ফেল করেছে ৬৭২ জন শিক্ষার্থী। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো—ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সব শিক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছে।

মাদরাসার সুপার গোলাম মোস্তফা জানান, “মাদরাসা থেকে মাত্র চারজন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছিল। এর মধ্যে একজন ছাত্রী বিয়ের কারণে এবং একজন ছাত্র বিদেশে চলে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বাকি দুজনের মধ্যে এক শিক্ষার্থী পরীক্ষার মাঝপথে সড়ক দুর্ঘটনায় হাত ভেঙে ফেলায় আর অংশ নিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত একজন পরীক্ষার্থী পূর্ণাঙ্গভাবে পরীক্ষা দিলেও সে পাস করতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন, “মাদরাসাটি প্রায় ২৫ বছর ধরে এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে অধিকাংশ শিক্ষক বিনা বেতনে কিংবা স্বল্প অনুপ্রেরণায় ক্লাস নেন। পাঠদানে অনীহা এবং কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশোনার সুযোগ পায় না। এতে করে এমন করুণ ফল হয়েছে।”

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ধামইরহাট উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সবাই ফেল করায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন এমপিওভুক্ত না থাকা, শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে এ মাদরাসাটির শিক্ষার মান ন্যুনতম পর্যায়েও পৌঁছাতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকরা।