ছবি:সময়ের সন্ধানে

গাজীপুর প্রতিনিধি:

সকাল থেকেই আকাশ মেঘাছন্ন। কখনও কখনও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির ফোটাও পড়ছে। দেশে চলছে আবহাওয়ার বৈরিতা চলছে লঘুচাপের বৃষ্টি। এদিকে দুপুর গড়াতেই মুষলধারে নামে বৃষ্টি। মানুষের চলাচল কমে যায় রাস্তাঘাটে। এরই মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়কে চলে তড়িগড়ির খানাখন্দ সংস্কারে কাজ। আসছে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে চলছে এ সংস্কার কাজ।

মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেই এ মহাসড়কে পিচঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। এমনি অহেতুক মানহীন কাজ করছে গাজীপুর সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ কর্তৃপক্ষ। এমন মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে মহাসড়কে পিচঢালাইয়ের কাজে সরকারি অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয় বলছে সচেতন মহল। চলছে মুধলধারে বৃষ্টি চলছে মহাসড়কে পিচঢালাইয়ের মহাকর্মযজ্ঞ।

পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এটি কতটা মানহীন কাজ হচ্ছে সেটা দেখার কেউ নাই। এমন বৃষ্টিতে সড়কে পিচঢালাই করা যায় তা দেখে বিস্মিত সবাই। এমন তড়িগড়ি কাজে অহেতুক সরকারি টাকা লুটের পাঁয়তারা মাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে জৈনা বাজার এলাকার ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে খানাখন্দ ভরাট করে সেখানে পিচঢালাই কার চলছিল। দুপুরের কিছু সময় পর মুষলধারে বৃষ্টির শুরু হয়। তবে সে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেই মহাসড়কের কার্পেটিং (পিচঢালাই) কাজ চালিয়ে যায় শ্রমিকরা।

তারা বলেন, সম্প্রতি এ মহাসড়কের বেশ কিছু জায়গায় ছোট বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। পরে সেগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করেন সড়ক ও জনপদ বিভাগ। তারা এ বৃষ্টির মধ্যেই বিটুমিন ঢেলে তাতে পাথরগুড়া ঢেলে দিচ্ছেন। কোনো কোনো গর্তে পানির মধ্যেই বিটুমিন ও পাথর রাখা হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে তেমন ভালো ভাবে সড়কে বিটুমিন ও পাথরগুড়া আটকে না থাকলেও রুলার দিয়ে পিষে আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের দাবি বৃষ্টির পরেই কার্পেটিং নষ্ট হয়ে যাবে। অহেতুক টাকা নষ্ট করা হচ্ছে সড়ক সংস্কারের নামে। গাড়ির চাকার সঙ্গে লেগেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। তারা বলে খুই নিন্মমানের কাজ ও অল্প পুরুত্বরে পিচ দেওয়া হচ্ছে।

মহাসড়কে কাজ করা রোলার চালক ইসলাম উদ্দীন বলেন, সামনে ঈদুল আজহা। এ জন্য খানাখন্দ ভরা সড়কে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। তাই পিচঢালাই দেওয়া হচ্ছে। কাজের চাপ আছে এ জন্য তড়িঘড়ি করে কাজ চলছে। আমাদের বলা হয়েছে কাজ চালিয়ে যেতে আমরা হুঁকুম পালন করছি।

শ্রীপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। এটা দুটি কারতে তারা (সংশ্লিষ্ট) করছে ব্যস্তার সুযোগে যেনতেন মানহীন কাজ করে ফেলা আর নয়তো তারা জানে এটার করার পরও কোনো জবাবদীহিতার মধ্যে তারে পড়তে হবে না। এমটা জেনে বুঝেই যদি মুষলধারে বৃষ্টিতে সড়কে পিচঢালায়ে বিটুমিনে কাজ চলানো হয় তবে এটা নিশ্চিত দুর্নীতি। এ জন্য তাদের জবাবদিহির আওয়াতায় আনা দরকার। না হলে দুর্নীতি কমবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সওজের একজন প্রকৌশলী বলেন, বিটুমিনের প্রধান শত্রু হলো পানি। পানির মধ্যে এমন কাজ করা সম্পূর্ণ নিষেধ। হালাকা যান চলাচল করে এমন সড়কেও কাজ করা যাবে না। এটা মহাসড়ক। ভারি যানবাহন চলে নিয়মিত। যে কোনো সড়কের কাজের প্রাইমকোট ও টেককোট ভালো হলেও বৃষ্টিতে কাজ করা যাবে না।