ঢাকা ০৫:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
শিরোনাম ::
ইতালীর এর নারী নাগরিকের পাসপোর্ট-মোবাইল ছিনতাই , গ্রেপ্তার ২ ভালুকায় বিরুনীয়া ইউনিয়নের অটো টেম্পু, সিএনজি, মাহিন্দ্রর রোড পরিচালনা কমিটির অনুমদন হাত-পা বেঁধে ৫ জন মিলে ধর্ষণের পর হাতিরঝিলে ফেলে রাখে কিশোরীর মরদেহ হারানো ৫২টি মোবাইল ফোন মালিকদের কাছে হস্তান্তর করলেন পুলিশ কমিশনার কক্সবাজারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেপ্তার ৭ নাটোরের চাঁদাবাজিকালে কৃষক লীগ নেতা ধরা, খুঁটিতে বাঁধল জনতা অতঃপর… নারায়ণগঞ্জে ওয়াশরুমে গিয়ে নিজের শরীরে আগুন দিয়ে নারীর আত্মহত্যা তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ নির্দোষ,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ইয়ামিনকে মারলো কে? রাজশাহীতে জামিনে মুক্তির পর,কারাফটকে ফের আটক বাগমারা’র-এমপি কালাম টাঙ্গাইলে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার ক্ষোভে স্ত্রীর হাত কেটে প্রতিশোধ নিলেন স্বামী!

অগ্নিসন্ত্রাসের বীভৎস কাহিনি শোনালেন হতাহতদের স্বজনরা

  • নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:১৯:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 112

ঢাকা: বাসে উত্তরা থেকে শনির আখড়া যাচ্ছিলের ওসমান নামে এক যাত্রী। সায়েদাবাদ পার হতেই হঠাৎ করে দেখতে পান বাসের ভেতর ছোড়া একটি বোতল থেকে আগুন জ্বলে উঠল।

কিছু বোঝার আগেই পুরো বাস ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। কোন পথে বের হবেন, খুঁজে পাচ্ছিলেন না ওসমান। আগুনে তার শরীর পুড়ছিল। উপায় না দেখে পেছনের কাচ ভেঙে কোনোমতে রক্ষা পান। তবে এরমধ্যেই তার শরীরের ৩০ ভাগ পুরে গেছে। এখন তিনি যন্ত্রণায় হাসপাতালে ছটফট করছেন।  

রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে কাঁদতে কাঁদতে বীভৎস এ ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ওসমানের মেয়ে সানজিদা।  

তিনি বলেন, আমার বাবাসহ বাসে যারা ছিলেন, তারা তো কোনো দোষ করেননি। তাহলে কেন তারা আজ বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে আহত হয়ে হাসপাতালে ছটফট করে রাত কাটাবেন? আমরা কি বিচার পাব না?

২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাসে আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ নামে একটি সংগঠন। আহত অনেকে এতে উপস্থিত ছিলেন।

হতাহতদের পরিবারের সদস্যসহ স্বজনরা অগ্নিসন্ত্রাসের বীভৎস কাহিনি তুলে ধরেন। তাদের কাহিনি শুনে উপস্থিতরা সবাই হতবাক হয়ে যান। আর্তনাদ আর কান্নায় শহীদ মিনার এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।  

২০১৫ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি মাফরুফা বেগম তার পরিবার চার সদস্য নিয়ে রাতের বাসে করে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। সবাই ছিলেন ঘুমে। কক্সবাজার পোঁছানোর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ করে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।  

কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে পুরো বাস আগুনের লেলিহান শিখায় ছেয়ে যায়। মাফরুফা বলেন, সেই বাসে আমি ও আমার মেয়ে বেঁচে ফিরতে পারলেও আমার স্বামী ও আমার এক ছেলে পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। আজও আমার সন্তান-স্বামীর আর্তনাদ শুনতে পাই।

তিনি বলেন, আমার সন্তানের মা মা ডাক আমাকে এখনো ঘুমাতে দেয় না। সেদিন আমার স্বামী সন্তানসহ সাতটি তাজা প্রাণ শেষ হয়ে যায়। আজ আমি নিঃস্ব। পৃথিবীর কোনো দেশে ক্ষমতার কারণে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে কি না, আমার জানা নেই। আমি এর বিচার চাই।

সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার মজিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার বাড়ি ঠাকুরগাঁও। আমি ভ্যান চালাই। রাজনীতি বুঝি না। বিএনপি-জামায়াত বুঝি না। কাজ করি, ভাত খাই। ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হলে হামলার শিকার হই।  

ট্যাগস :

ইতালীর এর নারী নাগরিকের পাসপোর্ট-মোবাইল ছিনতাই , গ্রেপ্তার ২

অগ্নিসন্ত্রাসের বীভৎস কাহিনি শোনালেন হতাহতদের স্বজনরা

আপডেট সময় : ০৩:১৯:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

ঢাকা: বাসে উত্তরা থেকে শনির আখড়া যাচ্ছিলের ওসমান নামে এক যাত্রী। সায়েদাবাদ পার হতেই হঠাৎ করে দেখতে পান বাসের ভেতর ছোড়া একটি বোতল থেকে আগুন জ্বলে উঠল।

কিছু বোঝার আগেই পুরো বাস ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। কোন পথে বের হবেন, খুঁজে পাচ্ছিলেন না ওসমান। আগুনে তার শরীর পুড়ছিল। উপায় না দেখে পেছনের কাচ ভেঙে কোনোমতে রক্ষা পান। তবে এরমধ্যেই তার শরীরের ৩০ ভাগ পুরে গেছে। এখন তিনি যন্ত্রণায় হাসপাতালে ছটফট করছেন।  

রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে কাঁদতে কাঁদতে বীভৎস এ ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ওসমানের মেয়ে সানজিদা।  

তিনি বলেন, আমার বাবাসহ বাসে যারা ছিলেন, তারা তো কোনো দোষ করেননি। তাহলে কেন তারা আজ বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে আহত হয়ে হাসপাতালে ছটফট করে রাত কাটাবেন? আমরা কি বিচার পাব না?

২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাসে আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ নামে একটি সংগঠন। আহত অনেকে এতে উপস্থিত ছিলেন।

হতাহতদের পরিবারের সদস্যসহ স্বজনরা অগ্নিসন্ত্রাসের বীভৎস কাহিনি তুলে ধরেন। তাদের কাহিনি শুনে উপস্থিতরা সবাই হতবাক হয়ে যান। আর্তনাদ আর কান্নায় শহীদ মিনার এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।  

২০১৫ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি মাফরুফা বেগম তার পরিবার চার সদস্য নিয়ে রাতের বাসে করে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। সবাই ছিলেন ঘুমে। কক্সবাজার পোঁছানোর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ করে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।  

কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে পুরো বাস আগুনের লেলিহান শিখায় ছেয়ে যায়। মাফরুফা বলেন, সেই বাসে আমি ও আমার মেয়ে বেঁচে ফিরতে পারলেও আমার স্বামী ও আমার এক ছেলে পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। আজও আমার সন্তান-স্বামীর আর্তনাদ শুনতে পাই।

তিনি বলেন, আমার সন্তানের মা মা ডাক আমাকে এখনো ঘুমাতে দেয় না। সেদিন আমার স্বামী সন্তানসহ সাতটি তাজা প্রাণ শেষ হয়ে যায়। আজ আমি নিঃস্ব। পৃথিবীর কোনো দেশে ক্ষমতার কারণে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে কি না, আমার জানা নেই। আমি এর বিচার চাই।

সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার মজিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার বাড়ি ঠাকুরগাঁও। আমি ভ্যান চালাই। রাজনীতি বুঝি না। বিএনপি-জামায়াত বুঝি না। কাজ করি, ভাত খাই। ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হলে হামলার শিকার হই।