ঢাকা ০৬:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১
শিরোনাম ::
‘বাবা, আমি মারা যাচ্ছি, আমার লাশটা নিয়ে যেও’ সাভার দত্তপুকুর এলাকা থেকে এক নারীর মাথা ও হাতবিহীন লাশ উদ্ধার শেরপুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পছন্দের ছেলেকেই অপহরণ, অতঃপর… খাগড়াছড়িতে নিজের বাবা-ভাইকে ফাঁসাতে হত্যা মামলা,১১ বছর পর তদন্তে বেরিয়ে এলো রোমহর্ষক তথ্য বরগুনা-১ আসনের সাবেক এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু গ্রেফতার দায়িত্ব নিয়ে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান সফল না হলে হয়ত জেলে থাকতাম: ফারুকী রায়পুরায় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত বাগমারা’য় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে জোরপূর্ব বিল দখলের অভিযোগ আ:লীগের বিচারের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিনা নোটিশে মৌসুমের শুরুতে বন্ধ গাজীপুরের সাফারি পার্ক, হতাশ দর্শনার্থীরা

ঘুমের আগে আট আমলের ফজিলত

  • NEWS DESK
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 67

ঘুম মানুষের ক্লান্তি-অবসাদ দূর করে। শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ঘুমের অবদান অসামান্য। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ ও নেয়ামত। মহৎ ইবাদতও বটে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমাদের নিদ্রাকে করেছি— ক্লান্তি দূরকারী।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ০৯)

মুসলিমদের প্রতিটি কর্ম আল্লাহর ইবাদত। তবে তা হতে হবে ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতি ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। তখন সবকিছুর মতো ঘুমও ইবাদত-পুণ্যে পরিণত হয়। এখানে ঘুমানোর আগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল দেওয়া হলো—

এক. ‘তিনকুল’ পড়ে ফুঁ দেওয়া।

দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে তাতে ফুঁ দেবে। তারপর দুই হাতের তালুর মাধ্যমে দেহের যতোটা অংশ সম্ভব— মাসেহ করবে। মাসেহ শুরু করবে— মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে (এভাবে ৩ বার করবে)। (বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)

দুই. আয়াতুল কুরসি পড়া।

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পড়বে, শয়তান সারারাত তার কাছে আসবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩১১)

তিন. সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত পড়া।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (আ-মানার রাসুলু বিমা–) তেলাওয়াত করবে, এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪০০৮)

চার. সুরা কাফিরুন পাঠ করা।

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘রাতে (কুল ইয়া আইয়্যু হাল কা-ফিরুন) (অর্থাৎ সুরা কা-ফিরুন) পাঠ করা শিরক থেকে মুক্তি পেতে উপকারী।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস : ৬০২)

পাঁচ. ‘কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ’ পাঠ।

একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) তার সাহাবাদের বললেন, ‘তোমাদের কেউ কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কোরআন পড়তে অসমর্থ হবে?’ এতে সকলকে বিষয়টি ভারী মনে করল। বলল, এই কাজ আমাদের মধ্যে কে পারবে— হে আল্লাহর রাসুল!? তখন তিনি বললেন, ‘সুরা ইখলাস হলো- এক-তৃতীয়াংশ কোরআন। (বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)

ছয়. ডান হাত গালের নিচে রেখে দোয়া পড়া।

আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন, তখন তার ডান হাত— তার গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দোয়াটি বলতেন— ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑِﺎﺳْﻤِﻚَ ﺃَﻣُﻮﺕُ ﻭَﺃَﺣْﻴَﺎ উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহ্ইয়া।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আপনার নাম নিয়েই আমি মরছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হব। (বুখারি, হাদিস : ৬৩২৪)

সাত. তাসবিহের আমল করা।

আল্লাহর রাসুল (সা.) তার মেয়ে ও জামাতা ফতেমা (রা.) ও হযরত আলী (রা.)- কে বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু বলে দেবো না— যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তোমরা (৩৩) বার সুবহানাল্লাহ, (৩৩) বার আলহামদুলিল্লাহ্ এবং (৩৪) বার আল্লাহু আকবার বলবে; তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৭০৫)

আট. সুরা মুলক পাঠ করা।

আল্লাহর নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে তাবারকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলক (সুরা মূলক) পাঠ করবে— এর মাধ্যমে মহিয়ান আল্লাহ্ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।’ ( তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯০)

মহান আল্লাহ আমাদের এই আমলগুলো করার তাওফিক দিন এবং আমাদের সর্বোত্তম সওয়াব ও প্রতিদান দিন। আমিন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

‘বাবা, আমি মারা যাচ্ছি, আমার লাশটা নিয়ে যেও’

ঘুমের আগে আট আমলের ফজিলত

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

ঘুম মানুষের ক্লান্তি-অবসাদ দূর করে। শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ঘুমের অবদান অসামান্য। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ ও নেয়ামত। মহৎ ইবাদতও বটে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমাদের নিদ্রাকে করেছি— ক্লান্তি দূরকারী।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ০৯)

মুসলিমদের প্রতিটি কর্ম আল্লাহর ইবাদত। তবে তা হতে হবে ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতি ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। তখন সবকিছুর মতো ঘুমও ইবাদত-পুণ্যে পরিণত হয়। এখানে ঘুমানোর আগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল দেওয়া হলো—

এক. ‘তিনকুল’ পড়ে ফুঁ দেওয়া।

দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে তাতে ফুঁ দেবে। তারপর দুই হাতের তালুর মাধ্যমে দেহের যতোটা অংশ সম্ভব— মাসেহ করবে। মাসেহ শুরু করবে— মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে (এভাবে ৩ বার করবে)। (বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)

দুই. আয়াতুল কুরসি পড়া।

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পড়বে, শয়তান সারারাত তার কাছে আসবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩১১)

তিন. সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত পড়া।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (আ-মানার রাসুলু বিমা–) তেলাওয়াত করবে, এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪০০৮)

চার. সুরা কাফিরুন পাঠ করা।

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘রাতে (কুল ইয়া আইয়্যু হাল কা-ফিরুন) (অর্থাৎ সুরা কা-ফিরুন) পাঠ করা শিরক থেকে মুক্তি পেতে উপকারী।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস : ৬০২)

পাঁচ. ‘কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ’ পাঠ।

একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) তার সাহাবাদের বললেন, ‘তোমাদের কেউ কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কোরআন পড়তে অসমর্থ হবে?’ এতে সকলকে বিষয়টি ভারী মনে করল। বলল, এই কাজ আমাদের মধ্যে কে পারবে— হে আল্লাহর রাসুল!? তখন তিনি বললেন, ‘সুরা ইখলাস হলো- এক-তৃতীয়াংশ কোরআন। (বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)

ছয়. ডান হাত গালের নিচে রেখে দোয়া পড়া।

আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন, তখন তার ডান হাত— তার গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দোয়াটি বলতেন— ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑِﺎﺳْﻤِﻚَ ﺃَﻣُﻮﺕُ ﻭَﺃَﺣْﻴَﺎ উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহ্ইয়া।

অর্থ : হে আল্লাহ্! আপনার নাম নিয়েই আমি মরছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হব। (বুখারি, হাদিস : ৬৩২৪)

সাত. তাসবিহের আমল করা।

আল্লাহর রাসুল (সা.) তার মেয়ে ও জামাতা ফতেমা (রা.) ও হযরত আলী (রা.)- কে বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু বলে দেবো না— যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তোমরা (৩৩) বার সুবহানাল্লাহ, (৩৩) বার আলহামদুলিল্লাহ্ এবং (৩৪) বার আল্লাহু আকবার বলবে; তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৭০৫)

আট. সুরা মুলক পাঠ করা।

আল্লাহর নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে তাবারকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলক (সুরা মূলক) পাঠ করবে— এর মাধ্যমে মহিয়ান আল্লাহ্ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।’ ( তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯০)

মহান আল্লাহ আমাদের এই আমলগুলো করার তাওফিক দিন এবং আমাদের সর্বোত্তম সওয়াব ও প্রতিদান দিন। আমিন।