ছবি:সংগৃহীত
দেশের আলোচিত মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ‘সময় মিডিয়া লিমিটেড’-এর পরিচালক পদ ফিরে পেলেন প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডার আহমেদ জোবায়ের। এছাড়া ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বকেয়া সম্মানিও দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্টের কোম্পানি বেঞ্চ এ রায় দেন। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সময় টিভির এমডি ও সিইও পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
সময় টিভির পরিচালনা নিয়ে গেলো বছরের ১৪ আগস্ট থেকে হাইকোর্টে মামলা চলছে। সময় মিডিয়া লিমিটেডের লাইসেন্সধারী ও প্রায় ১৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক আহমেদ জোবায়ের টেলিভিশনটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ফিরে পেতে এই মামলাটি করেন।
মূলত সময় মিডিয়া লিমিটেডের ‘বি’ গ্রুপের পরিচালকরা ‘এ’ গ্রুপের অন্যতম পরিচালক আহমেদ জোবায়েরকে এমডি পদ থেকে অব্যাহতি দিলে এই মামলার সূত্রপাত। প্রথমে গত বছরের আগস্টে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পরে ডিসেম্বরে আহমেদ জোবায়েরেকে পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন আহমেদ জোবায়ের।
গত ১৪ মে একই বেঞ্চ পরিচালকের পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে সরানোর কর্মকাণ্ডকে বাতিল ঘোষণা করেন। এসব কর্মকাণ্ড যাচাই করতে গিয়ে আদালতের কাছে সময় টিভির বর্তমান চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম ও এমডি শম্পা রহমানের নানা জাল জালিয়াতির বিষয়টি উন্মোচিত হয়। তারই প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের আদেশ দেন আদালত।
জানা গেছে, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সময় মিডিয়া লিমিটেড একটি অতিরিক্ত সাধারণ সভা (ইজিএম) করে আহমেদ জোবায়েরকে পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করে। নিয়ম অনুযায়ী ইজিএম করার বিষয়টি আহমেদ জোবায়েরসহ সব পরিচালককে তিন সপ্তাহ আগে জানাতে হবে। কিন্তু সময় কর্তৃপক্ষ সেটি না করে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে।
তারা আদালতকে জানিয়েছে ইজিএম—এর বিষয়টি আহমেদ জোবায়েরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি ইজিএম— এ হাজির হননি। ফলে তার অনুপস্থিতিতে অন্য পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারদের সিদ্ধান্ত মতে আহমেদ জোবায়েরকে পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করা হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হলো ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইজিএম করলেও আহমেদ জোবায়েরের নামে চিঠি পাঠিয়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে। চিঠির প্রাপকের ঠিকানায় আহমেদ জোবায়েরের নাম ঠিকানা লিখলেও চিঠিটি তারা পাঠিয়েছে অডিট ভবনের পোস্ট অফিস থেকে গুলশান পোস্ট অফিসে। গুলশান পোস্ট অফিস মূলত সিটি গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এলাকায়। আহমেদর জোবায়েরের ঠিকানা সেটি নয়।
আহমেদ জোবায়েরর আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এই জালিয়াতির বিষয়টি তথ্য প্রমাণসহ আদালতের নজরে আনলে আদালত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের ইজিএম— এর সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এছাড়া একই দিনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম— এর সিদ্ধান্তের ওপরও স্থগিতাদেশ দেন আদালত। এর ফলে, কোম্পানির আটিকেল অব এসোসিয়েশন বদল করার সিদ্ধান্ত স্থগিত থাকবে এবং আহমেদ জোবায়ের পরিচালক পদে বহাল থাকবেন বলে আদেশ দেন।
এই মামলায় আহমেদ জোবায়েরের আইনজীবী প্যানেলে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যরিস্টার কায়সার কামাল ছাড়াও আরো ছিলেন ব্যারিস্টার আহমেদ নাকিব করিম, ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব, ব্যারিস্টার রাফিউল মাহমুদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট ফয়সাল আল মাহমুদ।