ছবি: সংগৃহীত
হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি ও এর ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ভয়ংকর বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে পাকিস্তান। বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে অনেক জায়গায়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে ব্যাপক মাত্রায়। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানেই ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের, বাজাউর ও বাটগ্রাম। এ ছাড়া, দুর্যোগে পড়েছে কাশ্মীর এবং গিলগিত-বালতিস্তানও।
শনিবার (১৬ আগস্ট) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও এএফপি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্ষাকালে সাধারণত যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়, সে তুলনায় এবার অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে উত্তর পাকিস্তানে। এতে অনেক জায়গায় সড়ক ও ভবন ধসে সেগুলো ভেসে গেছে। এখন পর্যন্ত নতুন করে শুরু এ দুর্যোগে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২১ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাতে এএফপি বলছে, শুধু খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশেই ৩০৭ জন মারা গেছেন। তাদের অধিকাংশই আকস্মিক বন্যা ও বাড়িঘর ধসে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় দুই হাজার উদ্ধারকর্মী ৯টি জেলায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। কিন্তু এখনো বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উদ্ধার সংস্থার মুখপাত্র বিলাল আহমেদ ফয়েজি বলেন, ত্রাণ সরবরাহ অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে। ভারী বৃষ্টিপাত, বিভিন্ন স্থানে ভূমিধস ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতি ও অ্যাম্বুল্যান্স পরিবহন করা যাচ্ছে না। অধিকাংশ জায়গায় সড়ক বন্ধ থাকায় উদ্ধারকর্মীরা হেঁটে দুর্গম এলাকায় পৌঁছচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, জীবিতদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার করলেও অনেকেই যেতে চাইছেন না। তাদের স্বজনরা এখনো ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি পাহাড়ি জেলা— বুনের, বাজউর, সোয়াত, শাংলা, মানসেহরা ও বাত্তাগ্রামকে দুর্যোগাক্রান্ত এলাকা ঘোষণা করেছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রাদেশিক সরকার।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে আরো ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। এ ছাড়া জনগণকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার প্রতিনিধি সৈয়দ মুহাম্মদ তায়্যব শাহ বলেন, এ বছরের বর্ষা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আগে শুরু হয়েছে এবং দেরিতে শেষ হবে। আগামী ১৫ দিনে বর্ষার তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে।