ছবি:সংগৃহীত
গত ১৭ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিস্ব করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তঃবর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার হিসেব দেওয়া সম্ভব না।
সোমবার (২৩ জুন) মুহাম্মদ রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত রিসার্চ ফেয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা খুবই অল্প সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়েছি। যার জন্য আমাদের একটু চিন্তা করতে হয় কোনটা আগে করবো, কোনটা পরে করবো। হইতো কিছু বিষয়ে আগে থেকে ধারণা আছে আমাদের, তাই কিছু কাজ এগিয়ে নিতে পারছি।
উপদেষ্টা শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষকদের কারো রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতে পারে। আর সেই রাজনৈতিক বিশ্বাসের মধ্যে থাকতে হবে। আমার রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতে পারে। কিন্ত সে রাজনৈতিক বিশ্বাস, বিশ্বাসের পর্যায়ে থাকবে। পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে আনবেন না। সেখানে সকল ছাত্রের প্রতি যে দায়িত্ব সেটা আমি পালন করব।
নিজের শিক্ষকতা জীবনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি ৪০ বছর নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতা করেছি। জ্ঞানত, আমি কখনো ফাঁকি দেয়নি। সব সময় নীতিবান শিক্ষক হিসেবে আদর্শ ধারণ করতে চেষ্টা করেছি, সব সময় পারিনি, কিন্তু চেষ্টাটুকু করেছি। কিন্ত যখনই আমি দেখেছি, আমারই বন্ধু, বান্ধব টিচার্স লাউঞ্জে বসে। তাদের ৩০ থেকে ৪০টা ক্লাস নেওয়ার কথা। তার মধ্যে তারা ৪ থেকে ৫টা ক্লাস নিচ্ছে। পরে তারা বাকি ক্লাস নিচ্ছেন না। ছাত্র প্রতিনিধি এসে যখন বলছেন যে, ম্যাডাম বা স্যার আপনাদের ক্লাস আছে। তখন বলে বসো গিয়ে, আমি আসছি। আরও ১০-১৫ মিনিট গল্প করে তিনি গেলেন। আবার ক্লাস শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তিনি ফিরে আসলেন। এ ধরনেরও আমরা দেখেছি।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে শিক্ষক রিকোয়েন্টমেন্ট। সেখানে শিক্ষক রিকোয়েন্টমেন্ট হতো না। সেখানে ভোটার রিকোয়েন্টমেন্ট হতো। আমি বিশ্বাস করতে চাই, এই ধরনের একটা বাস্তবতা, আমরা পার হয়ে যেতে পারবো। কাজেই নতুন ভাবে আমাকে সব কিছু ঢেলে সাজাতে হবে। আমরা যদি আশা করি, আমাদের ছাত্ররা নিয়মিত ক্লাস করবে,আমরা যদি আশা করি তারা মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করবে, ফলে সেই পরিবেশ আমাকে সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে অব্যশই আমাদের শিক্ষকদের যে নিজস্ব যে নীতিবোধ সেটাকেও অনেক সমুন্নত রাখতে হবে। শিক্ষক হিসেবে আমার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হবে।
এ সময় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে অতিথিরা বিশ্বিবদ্যালয়ের গোল চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে রিসার্চ ফেয়ারের উদ্বোধন করেন। পরে রিসার্চ ফেয়ারে অংশ নেওয়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউট, বিভাগ ও সংগঠনের স্টল পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে ৭০ জন শিক্ষককে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ও রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড এবং ৩১ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।