অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যায় খুনি ভাড়া করেন স্বামী-শাশুড়ি

- আপডেট সময় : ০৬:২২:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি:সংগৃহীত
২০২১ সালের ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড এলাকায় খুন হন মাহবুবা আক্তার নামের অন্তঃসত্ত্বা নারী। তাকে খুন করতে দেড় লাখ টাকায় ভাড়াটে ঠিক করনে তার স্বামী ও শাশুড়ি। ওই খুনি তিন সহযোগী নিয়ে ঘরে ঢুকে গলা টিপে গৃহবধূকে হত্যা করেন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছড়িয়ে দেন ডাকাত দল খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
খুনের ওই ঘটনায় গতকাল সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ভাড়াটে খুনি নাম মো. আরিফ। জবানবন্দিতে তিনি আরও দুজনকে সঙ্গে নিয়ে মাহবুবাকে গলা টিপে হত্যার বিবরণ দেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। গত রোববার নগরের আতুরার ডিপো এলাকা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে মাহবুবা আক্তারের সঙ্গে তার খালাতো ভাই ও নগরের ইপিজেডের নারকেলতলা এলাকার বাসিন্দা আবদুল গোফরানের বিয়ে হয়। গোফরানের তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন মাহবুবা। বিয়ের পর থেকে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। তার মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলেন, তাদের অনুপস্থিতিতে ঘরে ঢুকে মাহবুবুকে শ্বাসরোধ করে ডাকাত দল খুন করেছে।
এ ঘটনায় মাহবুবার ভাই মো. মিশকাত বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এতে নিহত গৃহবধূর শাশুড়ি নাজনীন আক্তার ও স্বামী আবদুল গোফরানকে আসামি করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হয়। আদালত একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর পিবিআইকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার রুহুল কবীর খান বলেন, ভাড়াটে খুনি আরিফ আদালতে জবানবন্দিতে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তার সঙ্গে তিন সহযোগী ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর উপপরিদর্শক মহসীন চৌধুরী বলেন, জবানবন্দিতে আরিফ বলেছেন তিনি মাহবুবার স্বামী গোফরানের বাসায় ভাড়াটিয়া ছিলেন। ইপিজেডে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন তিনি। মাহবুবাকে হত্যার জন্য গোফরান এবং গোফরানের মা তার সঙ্গে দেড় লাখ টাকায় চুক্তি করেন। চুক্তিমতো তিনি তিনজন লোক ঠিক করেন। ঘটনার দিন সকালে বাসায় ঢুকে মাহবুবাকে গলা টিপে হত্যা করে তারা পালিয়ে গেছেন। পরে গোফরানের মায়ের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী পাওয়া দেড় লাখ টাকা নিয়ে সহযোগীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন।